
সানস্ক্রিন হলো বেসিক স্কিনকেয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা স্টেপ যেটা ছাড়া পুরো স্কিন কেয়ার ই অসম্পূর্ণ! আবহাওয়ার পরিবর্তন,লাইফস্টাইলের পরিবর্তন, স্কিনের বিভিন্ন সমস্যার কারনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অপরিহার্য।

সানস্ক্রিন হলো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টসের মধ্যে এমন একটি জরুরি প্রোডাক্ট যা আপনাকে সূর্যের UVA এবং UVB রশ্মি থেকে সুরক্ষা প্রদান করবে।

সানস্ক্রিন মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে।
১/ফিজিক্যাল বা মিনারেল সানস্ক্রিন।
২/অর্গানিক বা কেমিক্যাল সানস্ক্রিন।

কেমিক্যাল বা অর্গানিক সানস্ক্রিন সূর্যরশ্মিকে শোষন করে সেটার কার্যক্ষমতা কমিয়ে ফেলে।
ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল সানস্ক্রিনের সান প্রটেকশন ফিল্টার আলাদা হলেও দুটোই স্কিনে পরিপূর্ণ সান প্রটেকশন দিয়ে থাকে।তবে কিছু সানস্ক্রিনে ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল দুই ধরনের ফিল্টার থাকে যাকে মিক্সড বা হাইব্রিড সানস্ক্রিন বলে।এটিও পূর্ন সান প্রটেকশন দেয়।



সানস্ক্রিন নিয়ে মানুষের কৌতুহল ও আগ্রহের শেষ নেই।তাই অনেকেই সানস্ক্রিন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন।এসব প্রশ্নের সমাধানও থাকছে আজকের পোস্টে।

উঃ৬মাস বয়সের পর থেকেই সবার সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

উঃসকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যবহার করা উচিত
তবে বেশি গরমে বিকাল ৪টার পরেও যদি রোদ থাকে এবং আপনি বাহিরে যান তাহলে ব্যবহার করা উচিত।এছাড়া unlens নামে একটা এ্যাপ রয়েছে।এটা ব্যবহার করেও সানস্ক্রিন এপ্লাই করতে পারবেন।এতে আপনার লোকেশনে ইউভি রশ্মি কতটা সক্রিয় সেটা চেক করতে পারবেন এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি কিনা সেটাও।বুঝতে পারবেন।এ সংক্রান্ত পোস্ট আমাদের পেজে রয়েছে।যদি আপনার ড্যামেজড বা সেনসিটিভ স্কিন হয় তাহলে রাতে রান্নার সময় ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভালো।

উঃজি হবে ইন শা আল্লাহ।কিছু সানস্ক্রিনের গায়ে ওয়াটারপ্রুফ শব্দটা লেখা থাকলেও ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন বলে কিছু নেই।এটা একটা মার্কেট স্ট্র্যাটেজি।মূলত সানস্ক্রিন হয় ওয়াটার রেসিস্টেন্ট।এসব সানস্ক্রিন ৮০ মিনিট বা তার বেশি সময় পর্যন্ত ওয়াটার রেসিস্টেন্ট হয়ে থাকে।এখানে ওয়াটার রেসিস্টেন্ট মানে এটা নয় যে সানস্ক্রিন ব্যবহারে স্কিনে পানি প্রবেশ করবেনা।এর মানে এটাই যে সানস্ক্রিনটি স্কিনে পানি লাগলেও উঠে যাবেনা।তাই নিশ্চিন্তে সানস্ক্রিন ব্যবহার করে ওযু করতে পারেন।সানস্ক্রিন নেলপলিশ এর মতো কোনো প্রলেপ ফেলেনা স্কিনে।এরপরেও যদি আপনার সন্দেহ থাকে তাহলে ওযুর ঠিক আগেই সানস্ক্রিন না লাগিয়ে ওযুর পর লাগাবেন।অথবা ওয়াটার রেসিস্টেন্স যত সময় পর্যন্ত থাকে ততসময় পার হবার পর ওযু করবেন।

উঃজি অধিকাংশ ভালো সানস্ক্রিন ই পরিমানে ৫০মিলি থাকে।কিন্তু দাম একটু বেশি।প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে এপ্লাই,রিএপ্লাই করলে হয়তো দেড় দুইমাস চলে যায়।সেক্ষেত্রে বাজেট বাড়িয়ে পরিমান বেশি এমন সানস্ক্রিন নিতে পারেন।জাপানীজ বা অন্যান্য কিছু দেশে ১০০-১৫০ মিলির সানস্ক্রিনও রয়েছে।সেসব কিনতে পারেন।

উঃযত ধরনের একনে ই থাকুক সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।আর কার কোনটা স্যুট করবে সেটা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়না।তাই যেটা স্যু্ট করবে সেটাই কন্টিনিউ করতে হবে।ঠিকমতো ডাবল ক্লিনজিং করলে একনে বাড়ার সম্ভাবনা নেই।তবে ফাঙ্গাল একনে থাকলে সব সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবেনা।ফাঙ্গাল একনে সেইফ এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

উঃডাবল ক্লিনজিং স্কিনের পোরের ভেতর থেকে স্কিনকে প্রপারলি ডিপ ক্লিন করে।তাই করা উচিত।বাজেট কম থাকলে বাদ দিতে পারেন।তবে বাজেট থাকলে এটা করা ভালো।স্কিনকে হেলদি রাখে

উঃসানস্ক্রিন ডাবল ক্লিনজিং ছাড়াও উঠে যায়।তবে কিছু সানস্ক্রিন একটু স্টিকি হবার কারনে সহজে উঠতে চায়না।এজন্য একটু স্ট্রং ফোমিং ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন জেল বেইস্ড ক্লিনজারের বদলে।

উঃজি ব্যবহার করতে হবে।শীত কিংবা বর্ষা হোক সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।বাসায় পর্দা টেনে জানালা বন্ধ করে রুম অন্ধকার থাকলে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলেও হবে।আর বাহিরে নিক্বাব/মাস্ক পরে গেলে ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

উঃকরা ভালো।বিশেষকরে যারা প্রতিদির বাহিরে বের হয় তাদের হাত,পা,ঘাড়েও ব্যবহার করা উচিত।নয়তো এ বডিপার্টগুলো কালো হয়ে সানট্যান পড়তে পারে।

উঃক্যামিকেল সানস্ক্রিন বাহিরে যাবার বা মেকআপ করার ১৫/২০ মিনিট আগে ব্যবহার করতে হবে ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন ব্যবহারের পর সাথেসাথে ই বাহিরে যাওয়া বা মেকআপ করা যাবে।

উঃটিস্যু দিয়ে মুখ মুছে বা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে রিএপ্লাই করবেন।

উঃসানস্টিক বা স্প্রে সানস্ক্রিন বেস্ট অপশন।খুব সহজে স্প্রে করে রিএপ্লাই করা যায়।সানস্টিকও সহজে ব্যবহার করা যায়।

উঃফিজিক্যাল সানস্ক্রিনে Zinc oxide ও Titanium di oxide থাকার ফলে এটি স্কিনে সাদা হয়ে ভেসে থাকে যাকে হোয়াইটকাস্ট বলে।ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন ছাড়াও হাইব্রিড সানস্ক্রিনও কিছুটা হোয়াইট কাস্ট দেয়।কেমিক্যাল সানস্ক্রিন হোয়াইটকাস্ট দেয়না।

উঃছেলেরা পারবে।তবে বেবিদের জন্য আলাদা সানস্ক্রিন রয়েছে।সেসব ব্যবহার করাতে হবে।বড়দের সানস্ক্রিন বেবিদের ব্যবহার না করানোই ভালো।

উঃযদি সানস্ক্রিন ব্যবহারে চোখে কোনো ইরিটেশন না হয় তাহলে ব্যবহার করতে পারবেন।

উঃসঠিক পরিমানে এপ্লাই,রিএপ্লাই এর পরেও কালো লাগলে সানস্ক্রিন চেঞ্জ করতে হবে।পাউডার দিয়ে সেট করেও নিতে পারেন।এতেও কালোভাব কমবে।

উঃপুরো সানস্ক্রিন একবারে এপ্লাই না করে অল্প অল্প করে এপ্লাই করে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে।সবশেষে পাউডার দিয়ে সেট করে নিবেন।বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া হোয়াইটকাস্ট দেয়না এমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।

উঃনতুন যেকোন প্রোডডাক্ট স্কিনে স্যুট করতে সময় লাগে।তাই নতুন প্রোডাক্ট ব্যবহারে ব্রন হতে পারে।এক্ষেত্রে কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে ব্যবহার করবেন।এরপরেও যদি ব্রনহতে থাকে তাহলে এটা স্যুট করেনি বলে ধরতে হবে এবং চেঞ্জ করতে হবে।

উঃফিজিক্যাল সানস্ক্রিন ব্যবহার করা নিরাপদ।এ সময় স্কিন সেনসিটিভ থাকে।কেমিক্যাল সানস্ক্রিনে ইরিটেশন হতে পারে।ব্রেস্টফিডিং করালেও ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

উঃনা করাই ভালো
ঠোঁটে এসপিএফযুক্ত লিমবাম ব্যবহার করবেন।